নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর অনুপম দৃষ্টান্ত পৃথিবীর যে সেতুগুলো
আন্তর্জাতিক
নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর অনুপম দৃষ্টান্ত পৃথিবীর যে সেতুগুলো
যেকোনো সভ্যতাকে উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে হলে যাতায়াত ব্যবস্থা ও অবকাঠামোর উন্নতির দিকে নজর দিতেই হবে। সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো করতে হলে রাস্তার নিরবিচ্ছিন্নতা ধরে রাখতে হয়, যা বেশ কঠিন। রাস্তা একসময় থমকে যায়, বাধা হয়ে দাঁড়ায় কোন খাল-নদী, উপত্যকার মতো নিচু জায়গা। এরকম সংকটে সেতু একটি সহজ সমাধান। প্রাচীন ভারতীয় বা মিশরীয় সভ্যতা থেকে রোমানরা - ইতিহাসজুড়ে সেতু বানিয়েছে সবাই। আধুনিককালে এসে সেতুর চেহারা বদলেছে, বিশালাকৃতির অসংখ্য সেতু পৃথিবীজুড়ে চোখে পড়ে। 
প্রাচীনকাল থেকে আজকের ফিচারিস্টিক স্থাপত্যের যুগ- একটা টেকসই সেতু বানানো এবং এর সাথে সৌন্দর্যের অনুষঙ্গ যোগ করা সবসময়ই ছিল চ্যালেঞ্জিং কাজ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে গিয়ে ব্যবহৃত উপাদান বা ডিজাইনের ক্ষেত্রে যে বৈচিত্র্য এবং নতুনত্ব এসেছে তা অকল্পনীয়। এভাবে কোনো কোনো সেতু পরিণত হয়েছে নান্দনিকতার অনুপম দৃষ্টান্তে, আবার কোনটা গড়েছে ইতিহাস। এরকম কিছু প্রাচীন ও আধুনিক সেতুর গল্প নিয়ে সাজানো আজকের আয়োজন। 
রিয়াল্টো ব্রিজ, ভেনিস, ইতালি
রিয়াল্টো ব্রিজ, ভেনিস, ইতালি; ছবি: ইন্টারনেট
রিয়াল্টো ব্রিজ, ভেনিস, ইতালি; ছবি: ইন্টারনেট
ভেনিসের গ্র্যান্ড খালের উপরে বহু বছর ধরে টিকে থাকা রিয়াল্টো ব্রীজ রাজকীয় ভেনিসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। অগণিত আকর্ষণীয় গন্তব্যভর্তি ভেনিসে যেসব জায়গা না দেখলে আপনার ভেনিস ভ্রমণ কখনোই পূর্ণতা পাবেনা তার মাঝে একটি হলো রিয়াল্টো ব্রীজ। শেক্সপীয়রের রচনা থেকে ফ্রান্সিসকো গার্ডির চিত্রকর্ম - ইউরোপের শিল্পসাহিত্যে রিয়াল্টোর গুনগাণ একে প্রায় অমর এক স্থাপনার সম্মানে ভূষিত করেছে। রিয়াল্টোর নির্মাণের ইতিহাস বেশ দীর্ঘ। প্রথমে ১১৮১ সালে বেশকিছু খেয়ানৌকা জড়ো করে খাল পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়। তারপর কাঠের ব্রীজ হিসেবে উন্নতি ঘটে ব্রীজটির। চৌদ্দ শতকের এক বিদ্রোহে আগুন লেগে বিধ্বস্ত হয় ব্রীজটি। আরো কয়েকবার ধ্বসে পড়ার পর ব্রীজটির টেকসই নির্মাণের জন্য ডিজাইন চাওয়া হয় ইতালির শিল্পীদের কাছে। নির্বাচিত হয় এন্টেনিও দ্য পন্টের আর্চ ব্রীজের ডিজাইনটি। তখনকার সময়ে ভেনিসের বুকে একমাত্র পায়ে হেঁটে খাল পারাপারের এই মহাগুরুত্বপূর্ণ সেতুটির নির্মাণকাজ ১৫২৪ সালেই শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কয়েক দশক পিছিয়ে যায় ইউরোপের ভয়াবহ প্লেগ মহামারীর কারণে। অবশেষে ১৫৮৮ সালে এখনকার চেহারার মার্বেল ব্রীজটি নির্মাণ শুরু হয়েছিল । সান মার্কো ও সান পোলো ডিস্ট্রিক্টকে সংযুক্ত করতে বানানো হয়েছিল ব্রীজটি। বলাবাহুল্য, রিয়াল্টো গ্র্যান্ড খালের উপর নির্মিত সবচেয়ে পুরনো সেতু।  
মিলাউ ভায়াডাক্ট, ফ্রান্স
মিলাউ ভায়াডাক্ট, ফ্রান্স; ছবি: ইন্টারনেট
মিলাউ ভায়াডাক্ট, ফ্রান্স; ছবি: ইন্টারনেট
গর্জ উপত্যকা ছুঁয়ে বয়ে গেছে টার্ন নদী। দক্ষিণ ফ্রান্সের এই নদীর উপর নির্মিত একটি সেতু পৃথিবীকে হতবাক করে দিয়েছিল। সেতুর নাম মিলাউ ভায়াডাক্ট। ৩৩৬ মিটারের অবিশ্বাস্য উচ্চতায় ঝুলে থাকা সেতুটি মাত্র ৭ টি স্তম্ভের উপর ভর করে দাড়িয়ে আছে। স্তম্ভের উপরের উল্টো V আকৃতির অংশ থেকে টানা ধাতব তার পাতলা, ছিমছাম সেতুটিকে ধরে রেখেছে। সেতুটি একদম সোজা নয়, বরং একটু বাঁকানো। এটি প্যারিসকে ভূমধ্যসাগরীয় শহরগুলোর সাথে যুক্ত করেছে। বিখ্যাত ইংরেজ স্থপতি স্যার নরম্যান ফ্রস্টের ডিজাইন করা সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০০৪ সালে। তখন থেকেই এটি ইউরোপের সবচেয়ে উঁচু সেতু। ফ্রান্সের আরেকটি আইকনিক স্থাপনা সুউচ্চ আইফেল টাওয়ার থেকেও কয়েক মিটার বেশি উঁচু এটি। আধুনিক স্থাপত্যের জগতের বিস্ময় মিলাউ ভায়াডাক্টে প্রযুক্তির সাথে শিল্প ও সৌন্দর্যের অভূতপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটেছে। ব্রীজের উপর থেকে উপত্যকার প্যারানমিক ভিউ উপভোগ করা যায়। আর নিচের উপত্যকা থেকে ডুবে যাওয়া যায় ব্রীজের সৌন্দর্যে। 
সিডনি হারবার ব্রিজ, অস্ট্রেলিয়া
সিডনি হারবার ব্রীজ ছাড়া সিডনি শহরকে আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। ৫০৩ মিটার দীর্ঘ আর্চের সেতুটি শহরের এতটাই অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। পোর্ট জ্যাকসন বা সিডনি হারবার পৃথিবীর সেরা পোতাশ্রয়গুলোর একটি। এই পোতাশ্রয়ের উপরেই স্থাপিত পৃথিবীর সর্ববৃহৎ স্টিলের আর্চে তৈরী সেতু সিডনি হারবার ব্রীজ। শহরবাসী আদর করে একে ডাকে "কোট হ্যাংগার"। ৫৩০০০ টন স্টিল ও ছয় লাখ স্ক্রু সম্বলিত সেতুটির নির্মাণকাজ চলেছে আট বছর ধরে। সেতুটিতে হাইওয়ে, দুইটি রেলওয়ে এবং ফুটপাত আছে। ১৯৩২ সালে প্রথম ব্যবহারের জন্য খুলে দেয়া হয় ব্রীজটি। এখান থেকে চোখে পড়ে পুরো সিডনি শহরের নয়নাভিরাম দৃশ্য। ব্রীজে আপনি হাঁটতে পারবেন, সাইকেল চালাতে পারবেন, এমনকী ব্রীজের স্টিল বেয়ে ছাদেও উঠে যেতে পারবেন৷ সেই উচ্চতা থেকে উপভোগ করুন সিডনির শ্বাসরুদ্ধকর রুপ।  
চার্লস ব্রিজ, চেক প্রজাতন্ত্র
মধ্যযুগে বোহেমিয়ার রাজা চতুর্থ চার্লস ১৩৮৭ থেকে ১৪০২ সালের মাঝে নির্মাণ করেন এই সেতু। একই জায়গায় স্থাপিত জুডিথ ব্রীজ চৌদ্দ শতকে বন্যার তোড়ে ভেসে যাওয়ার পর ৪৫ বছর ধরে নির্মাণ কাজ চলে পাথরের এই ব্রীজটির। পিটার পার্লার নামের একজন স্থপতি ছিলেন নির্মাণের দায়িত্বে। পাথরের শক্তিশালী স্তম্ভের উপর বানানো সেতুটি বহু আর্চে বিন্যস্ত। দুইপাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুইটি বিশালাকার টাওয়ার সেতুটিকে ভিন্ন রকম গাম্ভীর্য প্রদান করেছে। রাস্তার দুইপাশে স্থাপিত প্রাগের সাধুসন্তদের ৩০ টি মার্বেল স্ট্যাচু একে পরিণত করেছে আকর্ষণীয় এক গন্তব্যে । গথিক স্থাপত্যশৈলীর অনন্য উদাহরণ এই সেতুটি। প্রাগের যান চলাচল ও ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি ঘটানো ব্রীজ নির্মাণের উদ্দ্যেশ্য ছিল। প্রাগ ক্যাসল এবং প্রাগ শহরেরর পুরনো অংশকে সংযুক্ত করেছে সেতুটি। ব্রীজটি ফেরিওয়ালা, আর্টিস্ট, মিউজিসিয়ানদের বিচিত্র কাজকর্মে মুখরিত থাকে সবসময়। প্রাগ শহর অসম্পূর্ণ চার্লস ব্রীজ ছাড়া। বিকেলে চার্লস ব্রীজের স্ট্যাচুদের পাহারায় হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়বে প্রাগের সবচেয়ে মনোহারিণী রুপ।  
স্টারি মোস্ট, বসনিয়া
অটোমানদের সমৃদ্ধ স্থাপত্যশৈলীর অপার নির্দশন এই সেতুটি। ১৫৫৭ থেকে ১৫৬৬ সালের মাঝে পাথর দিয়ে নির্মাণ করা হয় এই সেতু। নির্মাণের আদেশ এসেছিল প্রভাবশালী অটোমান সুলতান সুলেমান দ্য ম্যাগনিফিসেন্ট এর কাছ থেকে। ডিজাইন করেছিলেন বিখ্যাত স্থপতি মিমার সিনানের ছাত্র মিমার হায়রুদ্দিন। ২৪ মিটার উঁচু আর্চের সেতুটি নেভেটা নদীর খাড়া দুপাড়কে সংযুক্ত করেছে। এত উঁচুতে কোন খুঁটি ছাড়া ধনুকাকৃতির একটি সেতু ষোল শতকে যদি নির্মাণ করা হয়, তবে তাকে সেই সময়ের স্থাপত্যের বিস্ময় বলতেই হবে। ১৯৯০ এর দশকে বসনিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় সেতুটি ক্রোয়েশিয়ান সেনাবাহিনীর বোমা বিস্ফোরণে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। পরবর্তীকালে এটি পাথর দিয়ে, আগের আকৃতিতে পুর্ননির্মাণ করা হয়। গোধূলি বেলার সোনালি আভায় বা চাঁদের রুপালি, স্নিগ্ধ জ্যোৎস্নায় সেতুটি ধরা পড়ে অনন্য রুপে। মোস্তার শহরের সেরা নিদর্শন এই সেতুটি। নদীর পাশের অপরুপ পাহাড়ি শহরের পটভূমিতে সাধারণ চেহারার সেতুটি দেখতে খুবই অসাধারণ লাগে। স্টারি মোস্ট মানে "পুরনো সেতু"। কয়েক শত বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল পাথুরে সেতুটি তার সৌন্দর্য, প্রাচীনত্ব আর বিস্ময়কর স্থাপত্যশৈলী দিয়ে ইতিহাসে নাম লিখিয়ে নিয়েছে।  
হেলিক্স ব্রিজ, সিঙ্গাপুর
ডিএনএ'র আবিষ্কার শুধু জীববিজ্ঞানের জগত নয়, পৃথিবীর অনেককিছুই বদলে দিয়েছে। ডিজাইনের দুনিয়াতেও প্রভাব ফেলেছে ডিএনএর ডাবল হেলিক্স আকৃতি। ডিভাইন এই ডিজাইনে অণুপ্রাণিত হয়ে সিঙ্গাপুর তৈরী করে ফেলেছে পুরো একটি সেতু! হেলিক্স ব্রীজ নামের সেতুটি সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বড় পথচারী পারাপারের ব্রীজ। সিঙ্গাপুর নদীর উপর বে ফ্রন্ট নামের আরেকটি সেতু আছে যা যানবাহন পারাপারের কাজে ব্যবহৃত হয়। তার ঠিক উপরে বাঁকানো আকৃতির হেলিক্স সেতুটি বানানো হয়েছে। মেরিনা সেন্টারের সাথে মেরিনা সাউথকে সংযুক্ত করেছে এই সেতুটি। বিশেষ ধরনের ডুপ্লেক্স স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে নির্মিত সেতুটি ২৮০ মিটার দীর্ঘ। শুধুমাত্র স্টেইনলেস স্টিলের শক্তিতে কোন খুঁটি ছাড়া সাবলীলভাবে দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি। ২০০৭ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল এটির৷ গায়ে লাগানো নানা রঙের অসংখ্য আলোর জ্বলে ওঠা রাতের হেলিক্স ব্রীজকে চোখ ঝলসানো রুপে সাজিয়ে দেয়। শহরবাসী শুধু চলাচলের জন্য নয়, হেলিক্স ব্রীজের সৌন্দর্যসুধা পান করতেও ভিড় জমান এখানে।  
পন্ট দু গার্ড, ফ্রান্স
দক্ষিণ ফ্রান্সে, এভিগনন শহর থেকে ২৫ কি.মি. পশ্চিমে খুঁজে পাবেন রোমান আমলের সেতু পন্ট দু গার্ড। খ্রিস্ট্রীয় প্রথম শতকের মাঝামাঝি সময়ে সেতুটিকে জলপ্রণালি হিসেবে নির্মাণ করা হয়, নেমাসাস শহরে পানি পৌঁছে দেয়ার জন্য। রোমান আমলে পানির উৎস ( ঝর্ণা, লেক) থেকে ঢালু জায়গা দিয়ে নালা কেটে নিয়ে বসতি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হতো পানি। ৫০ কি.মি. দীর্ঘ এই নালাটি বানানোর সময় পথে পড়েছিল নদী ও উপত্যকা। তাই পানি পরিবহনকে ঝুঁকিতে না ফেলতে এই এলাকায় ব্রীজ বানানো ছাড়া উপায় ছিলনা। মানুষ পারাপারের সাথে দূরতম সম্পর্কও ছিলনা সেতুটির। ইউরোপ জুড়ে এরকম অসংখ্য জলপ্রণালির আশ্রয়ে তৈরী আর্চ বিশিষ্ট ব্রীজ দেখা যায়। তবে পন্ট দু গার্ড বিশেষ এর তিন স্তর বিশিষ্ট আর্চের জন্য। রোমানরা বিদায় নিয়েছে পৃথিবী থেকে কিন্তু রেখে গেছে তাদের কুশলী ইঞ্জিনিয়ারিং এর অনুপম দৃষ্টান্ত সেতুটি।  
উইন্ড এন্ডরেইন ব্রিজ, চীন
বাদলা দিনে নদীর উপরে তৈরী ছাদঢাকা কোন ব্রীজে বসে নদীর পানিতে বৃষ্টির পানি মিশে যাওয়া দেখতে দেখতে চা খাওয়ার কথা কল্পনা করেছেন কখনো? একটু অদ্ভুত শোনালেও বাস্তবের পৃথিবীতেই আছে এমন সেতু। চীনের ডং আদিবাসীদের নিপুণ হাতের কারুকাজে তৈরী এসব সেতুকে বলে উইন্ড এন্ড রেইন ব্রীজ। প্রথম দর্শনে দেখে মনে হয় যেন ব্রীজের উপর একটি ছোটখাটো প্রাসাদ। ডং গ্রামের মানুষেরা একটি ব্রীজকে শুধু নদী পারাপারের মাধ্যম বানায়নি, বানিয়েছে বৃষ্টির সময়ে পথচারীদের আশ্রয়, সামাজিকতা ও সৌহার্দ্য বিনিময়ের কেন্দ্র এবং বাহারি নকশাখচিত একটি শিল্পকর্ম। এরকম ব্রীজের উপরে থাকে টাওয়ার ও প্যাভিলিয়ন আর ব্রীজটি দাড়িয়ে থাকে পাথরের ভিত্তির উপরে। সবচেয়ে বিখ্যাত রেইন এন্ড উইন্ড ব্রীজ চেনজিয়াং ব্রীজ, গুয়াংশি রাজ্যের সানজিয়াং কাউন্টিতে অবস্থিত। তিনতলা এই ব্রীজে আছে তিনটা পিয়ার, ৫ টা প্যাভিলিয়ন, ১৯ টা বারান্দা। ৬৫ কি.মি. দীর্ঘ এবং ১১ মি উচু, ৩ মিটার প্রশস্ত। করিডোরের দেয়াল ফুলপাতা থেকে ড্রাগন সবকিছুর খোদিত নকশা চোখে পড়ে।

তথ্যসূত্র:
  • https://www.cnn.com/travel/article/most-amazing-bridges/index.html
  • https://zeymarine.com/top-10-most-impressive-bridges-in-the-world/
 
লেখক: সাবরিনা সুমাইয়া
আন্তর্জাতিক
আরো পড়ুন