নিপা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব, অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধ
আন্তর্জাতিক
নিপা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব, অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধ
দক্ষিণ ভারতের রাজ্য কেরালার কোঝিকোড়ে নিপা ভাইরাসে ইতিমধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের শরীরে নিপা ভাইরাসের ‘বাংলাদেশ ভ্যারিয়েন্ট’ পাওয়া গেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও বেশ কয়েকজন। এ ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিনই হাসপাতালে ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ।
এমন পরিস্থিতিতে কোঝিকোড় অঞ্চলে স্কুল-কলেজসহ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। নতুন করে নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত বেপোর সমুদ্রবন্দরেও সমস্ত ধরনের কাজকর্ম বন্ধ রাখা হয়েছে। গত ৩০ আগস্ট এবং ১১ সেপ্টেম্বর কোঝিকোড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। প্রথম জনের বয়স ছিল ৪৪ বছর, দ্বিতীয় জনের বয়স ছিল ৪০ বছর। কেরালা রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই মৃত প্রথম ব্যক্তিকে (ইনডেক্স কেস) শনাক্তকরণ করেছে। সরকারের পরবর্তী লক্ষ্য ওই মৃত ব্যক্তির মোবাইল ফোন টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে এই ভাইরাসের উৎস ও অবস্থান শনাক্তকরণ করা। অর্থাৎ মৃত্যুর আগে তিনি কার কার সাথে দেখা করেছিলেন, কোথায় কোথায় ভ্রমণ করেছিলেন, তা খুঁজে বের করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ ভ্যারিয়েন্টে মৃত প্রথম ব্যক্তির ৯ বছর বয়সী পুত্র ও ২৪ বছর বয়সী তার শ্যালকের শরীরেও নিপা ভাইরাসের প্রমাণ মিলেছে। তারা উভয়ই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের সাথেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুই ব্যক্তি। সব মিলিয়ে অ্যাকটিভ কেস বা পজিটিভ কেস’র সংখ্যা ৪। তারা সকলেই ৪৪ বছর বয়সী মৃত প্রথম ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন। শুধু তাই নয়, হাসপাতালে ভর্তি এই চারজন কাদের সাথে মিশেছিলেন, কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন সেগুলোও খোঁজ করা হচ্ছে। কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত কোনো নতুন পজিটিভ কেস পাওয়া যায়নি। ৯৪ জন উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তির পরীক্ষা করা হলেও তার রিপোর্ট নেতিবাচক এসেছে, এটা আমাদের কাছে স্বস্তির কারণ।

এই ভাইরাসে মৃত প্রথম ব্যক্তি যেসব এলাকায় অবস্থান করেছিলেন বা ঘুরেছিলেন ইতিমধ্যেই সেই সমস্ত এলাকা ‘কন্টেইনমেন্ট জোন’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন কোঝিকোড়ের সিটি মেয়র বীনা ফিলিপ।  এ নিয়ে ভারতের বিশিষ্ট মহামারি বিশেষজ্ঞ ডা. রমণ গঙ্গাখেরকড় বলেছেন, মালয়েশিয়ার স্ট্রেন স্নায়বিক উপসর্গ প্রকাশের জন্য পরিচিত। কিন্তু বাংলাদেশের স্ট্রেনটি অতিরিক্ত মৃত্যুর হার ঘটায়। এটি ১০ জন সংক্রামিত ব্যক্তির মধ্যে আনুমানিক ৯ জনকেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, মানবদেহের পাশাপাশি পশু-পাখিদের মধ্যে সংক্রমণ ঘটাতে পারে এই নিপা ভাইরাস। ফলাহারী বাদুর বা ‘ফ্রুট ব্যাটস’র মাধ্যমে মূলত এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সাধারণত জ্বর, পেশির ব্যথা, মাথা ধরা, ঝিমুনি এবং বমি ভাবের উপসর্গ দেখা দেয়।
আন্তর্জাতিকভারত
আরো পড়ুন