চাকরি
দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে ২৮ হাজার নিয়োগপ্রত্যাশীর
প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্ত অনেকে কাঙ্খিত প্রতিষ্ঠানের পাশে বাসা ভাড়া নিয়েছেন, অনেকে উচ্চ বেতনের প্রাইভেট চাকরি ছেড়েছেন, আবার অনেকে সুপারিশ পেয়েই বিয়ে করেছেন। কিন্তু তারা চূড়ান্ত সুপারিশ না পাওয়ায় মহাবিপদে পড়েছেন। নিয়োগের আশায় দিনের পর দিন অপেক্ষা করে চাকরিপ্রার্থীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। অপেক্ষার চেয়ে মৃত্যুকে তারা শ্রেয় মনে করছেন বলে জানান তারা।

ছবি: সংগৃহীত
নিয়োগপ্রত্যাশীরা বলেন, প্রাথমিক সুপারিশের ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও নিয়োগপত্র দিচ্ছে না এনটিআরসিএ। একের পর এক সমস্যা দাঁড় করানো হচ্ছে। নানা অজুহাত দেখিয়ে নিয়োগ বিলম্বিত করছে। এতে করে চরম হতাশায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন ২৮ হাজার নিয়োগপ্রার্থী। নিয়োগপ্রত্যাশী কুষ্টিয়ার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, একটি নিয়োগের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হচ্ছে। নিয়োগ পেয়েও নিয়োগপত্র ঝুলিয়ে রাখছে এনটিআরসিএ। আইনি জটিলতা, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনসহ নানা কারণ দেখিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের বয়স নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে হতাশার দিকে ঢেলে দেওয়া হচ্ছে চাকরিপ্রার্থীদের। টাঙ্গাইলের রবিউল ইসলাম বলেন, অপেক্ষা করতে করতে ৬ মাস। হতাশার চরম সীমায় পৌছে গেছি। অত্যন্ত কষ্টে দিন পাড় হচ্ছে। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। দ্রুত নিয়োগপত্র না দিলে বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়বে।
এদিকে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি নিয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান এনামুল কাদের খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আইনি জটিলতা আছে। এ নিয়ে বক্তব্য দিতে পারছি না। চেষ্টা আছে সমাধানের। এর বেশি কিছু বলতে পারছি না।’ এবারই নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া চাকরিপ্রার্থীদের কর্মস্থলে যোগদান সহজ ও দ্রুত করতে এনটিআরসিএ অনলাইন ভেরিফিকেশন চালু করে। ইতিমধ্যে ভি-রোল ফরম পূরণের ৬ মাস পেরিয়ে নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় হতাশ চাকরিপ্রার্থীরা। এরঅগে দ্রুত চূড়ান্ত সুপারিশ নিয়ে যোগদানের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করছেন প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্তরা। ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর ইস্কাটনে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন করেন তাঁরা। নতুন করে আরেকটি আইনি জটিলতার কারণ জানানো হলে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চূড়ান্ত সুপারিশপত্র দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে আল্টিমেটাম দিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিত করেন।
এনটিআরসিএর একাধিক সূত্র গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নিয়োগ কার্যক্রম একেবারেই গুছিয়ে আনা হয়েছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই নিয়োগের সুপারিশের আনুষ্ঠানিকতাও শেষ করার চেষ্টা ছিল। কিন্তু শেষ সময়ে এসে একটি রিট করা হয়েছে। ফলে হাইকোর্ট এ নিয়োগ কার্যক্রমের ওপরে ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এরপরও আইনি নানা দিক বিশ্লেষণ করে সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে। ছয় মাস তো অনেক দীর্ঘ। এত দিন অপেক্ষা করা চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষে দুষ্কর। এটি যাতে করতে না হয়, আবার আইনেরও ব্যত্যয় না হয়, সে জন্য আমরা পথ খুঁজছি। সমাধানের রাস্তাও খোঁজা হচ্ছে, যাতে দ্রুতই নিয়োগ দেওয়া যায়।’