মানুষের কব্জি কেটে টিকটকে ভিডিও দেখাতো তারা: র‌্যাব
জাতীয়
মানুষের কব্জি কেটে টিকটকে ভিডিও দেখাতো তারা: র‌্যাব
প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে হামলা, তারপর টার্গেটের বিভিন্ন অঙ্গ ও কব্জি বিচ্ছিন্ন করা; ঘটনাটি ভিডিও রেকর্ড করা, শেষে সেটি আবার টিকটকে প্রকাশ। একটি চক্র বহুদিন ধরে এমন অপকর্ম করে আসছিল। তাদের গ্রেপ্তার করেছে করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আরমান নামে এক যুবকের হাত থেকে কব্জি বিচ্ছিন্ন করে সে ভিডিও টিকটক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে একটি চক্র। ঘটনাটির অভিযোগ ও এ অপকাণ্ড আমলে নিয়ে তাদের পেছনে লাগে র‍্যাব-২ ও র‍্যাব-৬। গতকাল শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভোর পর্যন্ত চক্রটিকে ধরতে অভিযান চালায় এ বাহিনী। পরে মোহাম্মদপুর ও বাগেরহাট এলাকা থেকে চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদ্রের গ্রেপ্তারে র‌্যাবের অভিযান চলছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- আহমেদ খান (২২), মো. হাসান ওরফে গুটি হাসান (২৪), মো. হানিফ হোসেন জয় (২৪), রমজান (২৩), মো. রাজু (১৯)। তাদের কাছ থেকে ডাকাতি ও হামলার কাজে ব্যবহৃত দেশিয় ধারালো অস্ত্র পাওয়া যায়। এদের দেওয়া তথ্যে ভিত্তিতে মো. রাফিদুল ইসলাম রানা ওরফে রাফাত (২৩), ও তুষার হাওলাদার (২৩) গ্রেপ্তার হন। শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যরা ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছিল। এদের বিরুদ্ধে হামলা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও মামলা হয়েছে। 
বিভিন্ন গ্রুপের সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়। সম্প্রতি কতিপয় সন্ত্রাসী মোহাম্মদপুরে আরমান নামে এক যুবকের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে। এ দৃশ্য ভিডিওতে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে। এ ঘটনায় গত ২৭ আগস্ট ভুক্তভোগী নিজে বাদি হয়ে রাজধানীর মোহাম্মদ থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা (নং-১৫২) করেন। গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে কমান্ডার মঈন জানান, আসামিরা মোহাম্মদপুর ও আশপাশের এলাকায় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য। তাদের গ্রুপে প্রায় ১৫-২০ জন সদস্য রয়েছে। 
রাফাত, তুষার ও আনোয়ারের নেতৃত্বে কয়েক বছর ধরে গ্রুপটি পরিচালিত হয়ে আসছিল। তারা মোহাম্মদপুর, আদাবর, বেড়িবাঁধ ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো। এই গ্রুপের সন্ত্রাসীরা একাকী পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে দ্রুত পালিয়ে যায়। তারা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঢাকা উদ্যান, আদাবর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় দেশিয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারামারিসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রমও পরিচালনা করতো। 
জাতীয়অপরাধ
আরো পড়ুন