কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বদৌলতে যেভাবে বদলে যাবে গণমাধ্যম
আন্তর্জাতিক
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বদৌলতে যেভাবে বদলে যাবে গণমাধ্যম
চলতি বছর এপ্রিলে কুয়েত নিউজের পর্দায় ভেসে ওঠে ফেদাহ নামে এক নারীর মুখ। সাবলীলভাবে সে জানায়, আসলে সে মানুষ না, একটি এআই। কুয়েতের মতোই চলতি বছরে ভারতের একটি নিউজ চ্যানেল ‘আজতাক নিউজ’ সানা নামে এআই দিয়ে খবর পড়ানো শুরু করে। পেশাদার সংবাদ উপস্থাপিকা এআই সানাকে নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, মানুষ ক্লান্ত হয়, নেতিয়ে পড়ে, হোঁচট খায়। এসব এআই’র মধ্যে নেই। সানা সবসময় সতেজ, উৎফুল্ল ও ক্লান্তিহীন। 
সানা ভারতের যেকোনো ভাষায় সংবাদ উপস্থাপন করতে সক্ষম। এক্ষেত্রে অনেকেই বুঝতে পারছেন আলাদা করে একেক ভাষায় একেকজন সংবাদ উপস্থাপক রাখা, তাদের আলাদা বেতন দেয়া, বছরান্তে বেতন বাড়ানোর মতো ঝক্কি ঝামেলায় যাওয়ার থেকে একটি এআই দিয়ে কাজ চালিয়ে দেয়া যেকোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের জন্য সহজ। সম্প্রতি নিউজজিপিটি নামে একটি নিউজ চ্যানেল চালু হয়েছে, যেটি শতভাগ এআই নির্ভর। এই চ্যানেলের সংবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক, উপস্থাপক, এডিটর সবাই এআই। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অ্যালান লেভি বলেন, দীর্ঘসময় থেকে একপাক্ষিক ও খামখেয়ালি ধাঁচের সংবাদ দেখে ও পড়ে আমরা ক্লান্ত।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদসংস্থা ওয়াল স্ট্রিটের সাবেক সংবাদিক ও অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) এআই বিশেষজ্ঞ ফ্রান্সেসকো মার্কোনি বলেন, মূলত তিন ধাপে গণমাধ্যমে এআই তার জায়গা করে নিয়েছে। প্রথম ধাপে শুধু তথ্য সংগ্রহের জন্য এআই ব্যবহার করা হতো। অটোমেশনের মাধ্যমে নানা এআই ব্যবহার করে নানা রকমের প্রতিবেদন তৈরি করা হতো। এপি, এএফপি ও রয়টার্সের মতো প্রতিষ্ঠানও প্রতিবেদন তৈরি করতে এআই’র সাহায্য নিতো। দ্বিতীয় ধাপে বড় বড় পত্রিকা অফিসগুলো এআই ল্যাব খুলতে শুরু করে। সেখানে সাধারণত ভাষা ও তথ্যসমৃদ্ধ উন্নতমানের প্রতিবেদন তৈরির জন্য এআই ব্যবহার শুরু হয়। আর বর্তমানে এমন এক নতুন ধাপ শুরু হয়েছে, যেখানে এআই নিজেই একটি আস্ত প্রতিবেদন লিখে দিতে সক্ষম।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের এআই-জার্নালিজম বিভাগের প্রধান অধ্যাপক চার্লি বেকেট বলেন, সংবাদমাধ্যমে এআই ব্যবহার একটি বিপ্লব ঘটাবে এ কথা সত্যি। তবে এখানে মানুষের দেখভাল করা সবচেয়ে জরুরি। প্রযুক্তি ব্যবহার ভালো, কিন্তু প্রযুক্তির ওপরে একেবারে নির্ভরশীল হয়ে পড়লে ভুগতে হবে।’ বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, ২০২৬ সালের মধ্যে অনলাইন মিডিয়াগুলোর ৯০ শতাংশ সংবাদ সৃষ্টি হবে এআই’র হাত ধরে। এতে করে যেসব সাংবাদিক কেবল প্রতিদিনকার ইভেন্ট কাভার করে দিনতিপাত করেন, তারা বিপদে পড়বেন বলে মনে করেন মার্কোনি।
আন্তর্জাতিকবিশেষ প্রতিবেদন
আরো পড়ুন