কাওয়াকামি: যে গ্রামে ২৫ বছরেও জন্মেনি কোনো শিশু!
আন্তর্জাতিক
কাওয়াকামি: যে গ্রামে ২৫ বছরেও জন্মেনি কোনো শিশু!
 জন্মের সময় কেনতারো ইয়োকোবারি ছিল ২৫ বছরের মধ্যে কাওয়াকামি গ্রামে জন্ম নেওয়া একমাত্র নবজাতক। সে প্রায় ৭ বছর আগে জন্মগ্রহণ করে। তার জন্ম গ্রামবাসীর কাছে অলৌকিক ছিল। জাপানের সোগিও জেলার প্রত্যন্ত এ গ্রামটির প্রায় সবাই প্রবীণ। 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
ইয়োকোবারির জন্মের সময়ের স্মৃতি স্মরণ করে মিহো বলেন, তাঁকে দেখে গ্রামের সবাই খুব খুশি হয়েছিলেন। লাঠিতে ভর দিয়ে চলাফেরা করা বয়স্ক নারীরাও আমার বাচ্চাকে কোলে নেওয়ার জন্য এসেছিলেন। নবজাতক ছাড়া গ্রামটিতে জনসংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি কমে ১ হাজার ১৫০ জনে নেমে এসেছে। যেখানে ৪০ বছর আগেও গ্রামটির জনসংখ্যা ছিল ৬ হাজার। অনেকে গ্রামটি ছেড়ে চলে যাওয়ায় এবং বয়স্কদের মৃত্যুর কারণে কাওয়াকামিতে জনসংখ্যা দ্রুত কমে গেছে। অনেক বাড়ি পরিত্যক্ত হয়ে গেছে।

কাওয়াকামি জাপানের অসংখ্য ছোট গ্রামীণ শহর ও গ্রামগুলোর একটি, যেগুলো ধীরে ধীরে মানুষহীন হয়ে পড়ছে। দেশটির ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ এখন টোকিও, ওসাকা ও কিয়োটোর মতো শহুরে এলাকায় বাস করেন। এ পরিস্থিতি গ্রামীণ এলাকা এবং বনজ ও কৃষির মতো শিল্পগুলোকে একটি গুরুতর শ্রমঘাটতির সম্মুখীন করেছে। ২০২২ সাল নাগাদ কৃষি ও বনায়নে কর্মরত লোকের সংখ্যা ১৯ লাখে নেমে এসেছে। ১০ বছর আগেও এ সংখ্যা ছিল ২২ লাখ ৫০ হাজার। এসব তথ্য জাপানে প্রকট জনসংখ্যার সংকট তুলে ধরছে। কেবল গ্রামেই নয়, দেশটির শহরেও জনসংখ্যা দ্রুত কমছে। জন্মহার বাড়াতে দেশটির সরকারের উদ্যোগও কাজে আসছে না।
তরুণদের শহরমুখী হওয়ার প্রবণতার কারণে জাপানের গ্রামীণ এলাকাগুলো দিন দিন পরিত্যক্ত জনপদে পরিণত হচ্ছে। কৃষি, বনায়ন, গবাদি পশু লালন-পালনের মতো খাতগুলোয় শ্রমিক সংকট ভয়াবহ। ১০ বছর আগে কৃষি ও বনায়ন খাতে কাজ করত প্রায় ২৩ লাখ মানুষ। কিন্ত ২০২২ সালে এ সংখ্যা কমে ১৯ লাখে দাঁড়িয়েছে। গত জানুয়ারির হিসাবে জাপানে মোট জনসংখ্যা সাড়ে ১২ কোটির মতো। গত বছর সেখানে আট লাখের কম শিশুর জন্ম হয়েছে। অথচ ৭০-এর দশকেও দেশটিতে বছরে ২০ লাখের বেশি শিশুর জন্ম হতো। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা সম্প্রতি বলেন, ‘এখনই ব্যবস্থা না নিলে জাপানের সমাজব্যবস্থা অচল হয়ে পড়বে।’ দেশটিতে এ অবস্থার জন্য কারণ সমীক্ষা অনুযায়ী, শিশু লালন–পালনের ক্ষেত্রে বিশ্বে সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশগুলোর একটি জাপান। এ কারণে অনেকে সন্তান নিতে চান না।
আন্তর্জাতিকবিশেষ প্রতিবেদনজাপান
আরো পড়ুন