আন্তর্জাতিক
মুসলিম বিশ্বের যত ব্যতিক্রমী ভাস্কর্য
দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি-কালচারের সাক্ষীই বা কে বহন করে? স্বাভাবিকভাবেই বলা যায়, ভাস্কর্য তার একটি মোক্ষম উপাদান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের ঐতিহ্য, কালচার এসবের ওপর ভিত্তি করে নানান ধরণের ভাস্কর্য তৈরি করেছে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে নিয়ে যায় দেশটির সৌন্দর্য, কৃষ্টি কালচার, মানুষে মানুষে বন্ধনের রেশ, আরও কতকিছু! মুসলিম দেশগুলোও এর ব্যতিক্রম নয়। সৌদি আরব থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়া, মালয়শিয়া, মিশর, ইরান, ইরাক, তুরস্ক, কাতারসহ এরকম বহু মুসলিম দেশ আছে তারা তাদের সংস্কৃতিকে বহন করে চলেছে এই ভাস্কর্যের মাধ্যমে। আজকে আমরা মুসলিম বিশ্বের কয়েকটি ব্যতিক্রমী ভাস্কর্য নিয়ে আলোচনা করব।

ছবি: সংগৃহীত
উটের ভাস্কর্য, সৌদি আরব
ইসলামের পুণ্যভূমি হলো সৌদি আরব। ইসলামের দুইটা পবিত্র শহর মক্কা এবং মদিনা এদেশেই অবস্থিত। এখানে বসবাসরত প্রায় সবাই ধর্মপ্রাণ মুসলমান। তবে এখানেও রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য। সৌদির বাণিজ্যিক শহর জেদ্দার একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক মোড়ে তৈরি করা হয়েছে একাধিক উটের অবয়ব। ইসলামে তো প্রাণীর অবয়ব নির্মাণ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাহলে সৌদি আরব কেন উটের ভাস্কর্য নির্মাণ করল? শতভাগ মুসলিম দেশ সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম রাষ্ট্র। জনসংখ্যা প্রায় ৩ কোটির বেশি। এ দেশের শাসনকারী রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল আজিজ আল সৌদের নামানুসারে এ দেশের নামকরণ করা হয়েছে। সভ্যতার শুরু থেকেই শিল্পকর্মের প্রতি পৃথিবীর সব প্রান্তের মানুষের আলাদা একটা ঝোঁক লক্ষণীয়। প্রতিটি দেশ ভাস্কর্য কিংবা সৃষ্টিশীল স্থাপত্যকর্মের মধ্য দিয়ে নিজ নিজ অঞ্চলের ইতিহাস, ঐতিহ্য ইত্যাদি তুলে ধরে। এ ধারার ব্যতিক্রম নয় সৌদি আরব।
ইসলামের পুণ্যভূমি হলো সৌদি আরব। ইসলামের দুইটা পবিত্র শহর মক্কা এবং মদিনা এদেশেই অবস্থিত। এখানে বসবাসরত প্রায় সবাই ধর্মপ্রাণ মুসলমান। তবে এখানেও রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য। সৌদির বাণিজ্যিক শহর জেদ্দার একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক মোড়ে তৈরি করা হয়েছে একাধিক উটের অবয়ব। ইসলামে তো প্রাণীর অবয়ব নির্মাণ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাহলে সৌদি আরব কেন উটের ভাস্কর্য নির্মাণ করল? শতভাগ মুসলিম দেশ সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম রাষ্ট্র। জনসংখ্যা প্রায় ৩ কোটির বেশি। এ দেশের শাসনকারী রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল আজিজ আল সৌদের নামানুসারে এ দেশের নামকরণ করা হয়েছে। সভ্যতার শুরু থেকেই শিল্পকর্মের প্রতি পৃথিবীর সব প্রান্তের মানুষের আলাদা একটা ঝোঁক লক্ষণীয়। প্রতিটি দেশ ভাস্কর্য কিংবা সৃষ্টিশীল স্থাপত্যকর্মের মধ্য দিয়ে নিজ নিজ অঞ্চলের ইতিহাস, ঐতিহ্য ইত্যাদি তুলে ধরে। এ ধারার ব্যতিক্রম নয় সৌদি আরব।

ছবি: সংগৃহীত
তবে এখানে তারা ভাস্কর্য নির্মাণের ক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রমী ভাবনা নিয়ে এসেছে। যেমন উট তাদের ঐতিহ্যের অংশ। এজন্য উটের ভাস্কর্য নির্মাণ করার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছে। কিন্তু কনক্রিট নির্মিত এই ভাস্কর্যটি মোট চারটি অংশে বিভক্ত করে নির্মিত হয়েছে। আলাদাভাবে বিবেচনা করলে কোনো অংশই প্রাণীর অবয়বের মধ্যে পড়ে না। প্রতিটি অংশকে আলাদাভাবে বিচ্ছিন্ন কিছু কনক্রিট স্থাপনা ছাড়া আর কিছুই ভাবা যায় না। শুধু তাই নয়, চারটি অংশ মিলে নির্মিত এই স্থাপনাটি যে একটি উট সেটা বুঝতে হলেও অন্তত দু'বার তাকিয়ে দেখতে হয়। স্পষ্টভাবে প্রাণীর ভাস্কর্য নির্মাণ নিষিদ্ধ বলেই ইসলামের পূণ্যময় ভূমি সৌদি আরব এই ব্যতিক্রমী স্থাপনা নির্মাণের মধ্য দিয়ে তাদের ঐতিহ্য রক্ষার চেষ্টা করছে। তারপরও এই স্থাপনাটি ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে হারাম কিনা সেই বিতর্কে আমি যাব না। তবে সৌদি আরব যে একটি ব্যতিক্রমী স্থাপনা নির্মাণের মধ্যদিয়ে তাদের ঐতিহ্য রক্ষা করছে এটাই আমার আলোচনার মূল বিষয়বস্তু।
দ্য হাংরি হর্স, সৌদি আরব
উটের সঙ্গে যেমন মিশে আছে আরবদের কৃষ্টি-কালচার এবং ঐতিহ্য, ঠিক একইভাবে ঘোড়াও আরব ঐতিহ্যের একটি অংশ। তাই জেদ্দায় নির্মিত হয়েছে 'দ্য হাংরি হর্স' নামে বেশ কয়েকটি ঘোড়ার ভাস্কর্য। এখানেও সৌদি আরব স্পষ্টভাবে ব্যতিক্রম চিন্তাভাবনার স্পর্শ রেখেছে। প্রত্যেকটি ঘোড়া দুটি অংশে বিভক্ত। কনক্রিট নির্মিত এই ঘোড়াগুলোর কোনোটিরই মাঝের অংশ নেই। পিছনের অংশে দুই পা-সহ কংক্রিটের স্তম্ভ এবং সামনের অংশে দুই পা-সহ সম্মুখভাগ। মাঝখানের এই অংশ নেই বলেই স্থাপনাগুলো নামকরণ করা হয়েছে দ্য হাংরি হর্স।
দ্য হাংরি হর্স, সৌদি আরব
উটের সঙ্গে যেমন মিশে আছে আরবদের কৃষ্টি-কালচার এবং ঐতিহ্য, ঠিক একইভাবে ঘোড়াও আরব ঐতিহ্যের একটি অংশ। তাই জেদ্দায় নির্মিত হয়েছে 'দ্য হাংরি হর্স' নামে বেশ কয়েকটি ঘোড়ার ভাস্কর্য। এখানেও সৌদি আরব স্পষ্টভাবে ব্যতিক্রম চিন্তাভাবনার স্পর্শ রেখেছে। প্রত্যেকটি ঘোড়া দুটি অংশে বিভক্ত। কনক্রিট নির্মিত এই ঘোড়াগুলোর কোনোটিরই মাঝের অংশ নেই। পিছনের অংশে দুই পা-সহ কংক্রিটের স্তম্ভ এবং সামনের অংশে দুই পা-সহ সম্মুখভাগ। মাঝখানের এই অংশ নেই বলেই স্থাপনাগুলো নামকরণ করা হয়েছে দ্য হাংরি হর্স।

ছবি: সংগৃহীত
এখানে সৌদি আরব ভাস্কর্য হিসেবে ঘোড়া নির্মাণ করলেও ঘোড়ার পরিপূর্ণ অবয়ব বা আকৃতি তৈরি করেনি। ফাঁকা রেখেছে মাঝখানের অংশ। কাজেই নিঃসন্দেহে বলা যায় যে এটি একটি অসম্পূর্ণ প্রাণীর অবয়ব । ইসলামী দৃষ্টিকোণে এর অবস্থান কি তা আমার জানা নেই। তবে সৌদি আরব যে তাদের ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই এই ব্যতিক্রমী স্থাপনা নির্মাণ করেছে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
ক্রাইস্ট ব্লেসিং, ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়ার শহর মানাডোতে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম সুন্দর ভাস্কর্য ‘দ্য স্ট্যাচু অব ক্রাইস্ট ব্লেসিং’। এটি খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্টের ভাস্কর্য। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫০ মিটার পাহাড়ি উচ্চতায় এই ভাস্কর্যের অবস্থান। ছোট্ট এই শহরের যে কোনো প্রান্ত থেকে ভাস্কর্যটি দেখা যায়। ভ্রমণপ্রিয়দের জন্য দারুণ এক অভিজ্ঞতা এটি। ভাস্কর্যটির উচ্চতা ৫০ মিটার, যার মধ্যে প্রস্থ ২০ মিটার। এটি ২৫ টন তন্তু, ৩৫ টন স্টিল দিয়ে তৈরি। মানাডোর চিত্রাল্যান্ডের আবাসিক এলাকার সামনেই অবস্থিত যিশুর ভাস্কর্য। বিশ্বজুড়ে যিশুখ্রিস্টের যে ৫টি বৃহৎ ভাস্কর্য আছে তার মধ্যে এটি একটি। এশিয়ার সেরা ১০ ভাস্কর্যের মধ্যেও এর নাম আছে।
ইন্দোনেশিয়ার শহর মানাডোতে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম সুন্দর ভাস্কর্য ‘দ্য স্ট্যাচু অব ক্রাইস্ট ব্লেসিং’। এটি খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্টের ভাস্কর্য। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫০ মিটার পাহাড়ি উচ্চতায় এই ভাস্কর্যের অবস্থান। ছোট্ট এই শহরের যে কোনো প্রান্ত থেকে ভাস্কর্যটি দেখা যায়। ভ্রমণপ্রিয়দের জন্য দারুণ এক অভিজ্ঞতা এটি। ভাস্কর্যটির উচ্চতা ৫০ মিটার, যার মধ্যে প্রস্থ ২০ মিটার। এটি ২৫ টন তন্তু, ৩৫ টন স্টিল দিয়ে তৈরি। মানাডোর চিত্রাল্যান্ডের আবাসিক এলাকার সামনেই অবস্থিত যিশুর ভাস্কর্য। বিশ্বজুড়ে যিশুখ্রিস্টের যে ৫টি বৃহৎ ভাস্কর্য আছে তার মধ্যে এটি একটি। এশিয়ার সেরা ১০ ভাস্কর্যের মধ্যেও এর নাম আছে।
মানাডো ইন্দোনেশিয়ার খ্রিস্টান অধ্যুষিত শহর। এ শহরে বসবাসকারী প্রায় ৭০% মানুষই খ্রিস্টান। ঠিক সেকারণেই এখানে যিশুর ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে। পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া যেহেতু পর্যটন নির্ভর দেশ, তাই পর্যটকদের জন্যও এই ভাস্কর্যটি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। তবে এই ভাস্কর্য সেদেশের সরকার নির্মাণ করেনি।

ছবি: সংগৃহীত
মানাডো শহরে খ্রিস্টান প্রতিনিধিরা যখন আসা শুরু করে তখনই মূলত এই ভাস্কর্য তৈরি করা হয়। নির্মাণকাজ শুরু হলেও বহু বছর পর্যাপ্ত তহবিলের অভাবে এর নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল। ২০০৭ সালে ইন্দোনেশিয়ার ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী সিপুত্র এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্য এগিয়ে আসেন। তার সহায়তায় বিখ্যাত ইয়োগজাকার্তা ইঞ্জিনিয়ার কোম্পানি ভাস্কর্য নির্মাণের কাজে হাত দেয়। ৩ বছর লাগে এটি নির্মিত হতে। এর নির্মাণে খরচ হয় ৫৪০ হাজার ডলার। ২০১০ সালে এটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। স্থাপনের পর থেকেই মানাডো পেয়েছে ভিন্ন এক নতুন মাত্রা।
আরবীয় যুগল, আরব আমিরাত
১৯৭১ সালে ১৪ দিনের ব্যবধানে স্বাধীন হয়েছিলো বাংলাদেশ আর সংযুক্ত আরব আমিরাত। একই বছর স্বাধীন হয়ে আজ আমিরাত বিশ্বের উন্নত দেশের কাতারে শামিল। পরিকল্পনা ও কর্মদক্ষতার মধ্য দিয়ে আমিরাত বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোনায় অবস্থিত সাতটি স্বাধীন রাষ্ট্রের একটি ফেডারেশন। এগুলো একসময় ট্রুসিয়াল স্টেটস নামে পরিচিত ছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাতে তলোয়ার নৃত্য জনপ্রিয়। অন্যান্য আরব দেশের মতো এখানে তলোয়ার নৃত্য প্রচলিত। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘সোর্ড ড্যান্স'।
১৯৭১ সালে ১৪ দিনের ব্যবধানে স্বাধীন হয়েছিলো বাংলাদেশ আর সংযুক্ত আরব আমিরাত। একই বছর স্বাধীন হয়ে আজ আমিরাত বিশ্বের উন্নত দেশের কাতারে শামিল। পরিকল্পনা ও কর্মদক্ষতার মধ্য দিয়ে আমিরাত বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোনায় অবস্থিত সাতটি স্বাধীন রাষ্ট্রের একটি ফেডারেশন। এগুলো একসময় ট্রুসিয়াল স্টেটস নামে পরিচিত ছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাতে তলোয়ার নৃত্য জনপ্রিয়। অন্যান্য আরব দেশের মতো এখানে তলোয়ার নৃত্য প্রচলিত। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘সোর্ড ড্যান্স'।

ছবি: সংগৃহীত
সংযুক্ত আরব আমিরাতের উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য হলো আরবীয় যুগলের মূর্তি, দুবাইয়ের ওয়াফি অঞ্চলের প্রবেশপথে পাহারাদারের প্রতিমূর্তি হিসেবে সংস্থাপিত কুকুরের মূর্তি, দুবাইয়ের ইবনে বতুতা মার্কেটে স্থাপিত মূর্তি। আরব যুগলের ভাস্কর্য আমিরাতের সবচেয়ে পরিচিত ও জনপ্রিয় ভাস্কর্য যা ঠিক বুর্জ খলিফার সামনেই অবস্থিত।
হারসেনিং দ্য ওয়ার্ল্ড, কাতার
পারস্য উপসাগরের একটি দেশ কাতার। দক্ষিণ আরবীয় অঞ্চলে ইসলাম প্রসারে আলা আল হাদরামি এখানে এসেছিলেন ৬২৮ সালে। তখন কাতার অঞ্চলে শাসন করছিল স্থানীয় বনু তামিম গোত্র। বনু তামিমের গোত্রপ্রধান মুনযির বিন সাওয়া আল তামিমি ইসলাম গ্রহণে সম্মত হন এবং পরে অন্যান্য গোত্রে ইসলাম প্রসারে ভূমিকা রাখেন। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর একটি কাতার। মোট জনসংখ্যার ৬৭.৭ শতাংশ মুসলিম। কাতারেও দেখা যায় ব্যয়বহুল ও দৃষ্টিনন্দন সব ভাস্কর্য ও স্থাপত্য। কাতারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য হলো ‘হারনেসিং দ্য ওয়ার্ল্ড’, মানে হচ্ছে বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ।
পারস্য উপসাগরের একটি দেশ কাতার। দক্ষিণ আরবীয় অঞ্চলে ইসলাম প্রসারে আলা আল হাদরামি এখানে এসেছিলেন ৬২৮ সালে। তখন কাতার অঞ্চলে শাসন করছিল স্থানীয় বনু তামিম গোত্র। বনু তামিমের গোত্রপ্রধান মুনযির বিন সাওয়া আল তামিমি ইসলাম গ্রহণে সম্মত হন এবং পরে অন্যান্য গোত্রে ইসলাম প্রসারে ভূমিকা রাখেন। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর একটি কাতার। মোট জনসংখ্যার ৬৭.৭ শতাংশ মুসলিম। কাতারেও দেখা যায় ব্যয়বহুল ও দৃষ্টিনন্দন সব ভাস্কর্য ও স্থাপত্য। কাতারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য হলো ‘হারনেসিং দ্য ওয়ার্ল্ড’, মানে হচ্ছে বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ।

ছবি: সংগৃহীত
কাতারের রাজধানী দোহায় কাতার সংস্কৃতি কেন্দ্রে কাতারা আম্পি থিয়েটারের সামনে স্থাপিত হয় পুরো পৃথিবীকে সংযোগ স্থাপন করা নারী প্রতিমূর্তির অবয়বের এই ভাস্কর্য। বিশ্বের নানা প্রান্তের পর্যটকদের জন্য এটি আকর্ষণীয় স্থান।
সালাউদ্দিন আইয়ুবীর ভাস্কর্য, সিরিয়া
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়ার জনসংখ্যা প্রায় দুই কোটি। প্রায় ৭৪ শতাংশ মুসলিম। সুন্নি প্রধান এ দেশেও রয়েছে শিয়া-সুন্নি-কুর্দি দ্বন্দ্ব। রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রায় তিন দশক সিরিয়া শাসন করেছেন সংখ্যালঘু আলওয়াইট সম্প্রদায়ের হাফিজ আসাদ। বর্তমানে রাষ্ট্রপতি তার ছেলে বাশার আল আসাদ। অন্যান্য স্বৈরতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের মতো সিরিয়াজুড়ে রয়েছে হাফিজ আসাদের মূর্তি। বর্তমানে সেখানে রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে চলছে গৃহযুদ্ধ। তার রেশ আছড়ে পড়ে হাফিজ আসাদের ভাস্কর্যে। বিদ্রোহীদের নাগালে এলে ভূপাতিত হতে হয় হাফিজ আসাদের মূর্তিকে। সিরিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত ভাস্কর্যটি হলো বীর মুসলিম সেনাপতি সালাদিন (জন্ম : ১১৩৭- মৃত্যু : ১১৯৩)-এর স্মরণে নির্মিত ‘স্ট্যাচু অব সালাদিন’। ব্রোঞ্জের তৈরি এই ভাস্কর্যটি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কেন্দ্রস্থল সিটিডাল অব দামেস্কে অবস্থিত। ৪ মার্চ, ১৯৯৩ সালে সিরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হাফিজ আসাদ কুর্দি বংশোদ্ভূত সুলতান সালাদিনের ৮০০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন। ঐতিহাসিক ভাস্কর্যটির ভাস্কর আবদুল্লাহ-আল-সাঈদ।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়ার জনসংখ্যা প্রায় দুই কোটি। প্রায় ৭৪ শতাংশ মুসলিম। সুন্নি প্রধান এ দেশেও রয়েছে শিয়া-সুন্নি-কুর্দি দ্বন্দ্ব। রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রায় তিন দশক সিরিয়া শাসন করেছেন সংখ্যালঘু আলওয়াইট সম্প্রদায়ের হাফিজ আসাদ। বর্তমানে রাষ্ট্রপতি তার ছেলে বাশার আল আসাদ। অন্যান্য স্বৈরতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের মতো সিরিয়াজুড়ে রয়েছে হাফিজ আসাদের মূর্তি। বর্তমানে সেখানে রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে চলছে গৃহযুদ্ধ। তার রেশ আছড়ে পড়ে হাফিজ আসাদের ভাস্কর্যে। বিদ্রোহীদের নাগালে এলে ভূপাতিত হতে হয় হাফিজ আসাদের মূর্তিকে। সিরিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত ভাস্কর্যটি হলো বীর মুসলিম সেনাপতি সালাদিন (জন্ম : ১১৩৭- মৃত্যু : ১১৯৩)-এর স্মরণে নির্মিত ‘স্ট্যাচু অব সালাদিন’। ব্রোঞ্জের তৈরি এই ভাস্কর্যটি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কেন্দ্রস্থল সিটিডাল অব দামেস্কে অবস্থিত। ৪ মার্চ, ১৯৯৩ সালে সিরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হাফিজ আসাদ কুর্দি বংশোদ্ভূত সুলতান সালাদিনের ৮০০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন। ঐতিহাসিক ভাস্কর্যটির ভাস্কর আবদুল্লাহ-আল-সাঈদ।
এখানে উল্লেখ্য যে, সিরিয়া সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলেও দেশের শাসনভার বরাবরই শিয়াদের হাতে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ এবং তার পিতা হাফিজ আসাদও ছিলেন কট্টর শিয়া। তাদের ধর্মমতে ভাস্কর্যের প্রতি রক্ষণশীল হতে দেখা যায় না। তাইতো ইরানে রয়েছে শত শত মূর্তি। একইভাবে ইরানের মদদে ক্ষমতায় থাকা সিরিয়ার শিয়া স্বৈরশাসকগণ সেদেশে একাধিক ভাস্কর্য নির্মাণ করেছে।
হাম্মুরাবি, ইরাক
বর্তমানে জনসংখ্যার হিসাবে মুসলিম দেশের মধ্যে অবস্থান ১২-তে হলেও ইসলামের ইতিহাসের স্বর্ণযুগ হয়েছিল ইরাকেই। দেশটির জনসংখ্যার মাত্র ৩৬.৬ শতাংশ মুসলিম। এছাড়া প্রায় ৬৫ শতাংশই শিয়া। ইরাক নানা ভাস্কর্যে সমৃদ্ধ বেশ আগে থেকেই। সাদ্দাম হোসেনের বিশাল আকারের ভাস্কর্যটি মার্কিন আগ্রাসনের পর ভেঙে ফেলা হয়। তাই বলে ভাস্কর্যহীন হয়নি ইরাক। প্রচুর ঐতিহাসিক ও দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্যের মালিক দেশটি। বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে ডানার ভাস্কর্যটি নজর কাড়ে যে কারও। বাগদাদের পাশে আল-মনসুর শহরে আছে মনসুরের (বাগদাদের প্রতিষ্ঠাতা) একটি বিশাল ভাস্কর্য। রয়েছে অনেক সাধারণ সৈনিকের ভাস্কর্যও। রাজধানী বাগদাদে বেশকিছু বিখ্যাত মূর্তির মধ্যে আছে ইন্টারন্যাশনাল জোনে হাম্মুরাবির মূর্তি। অ্যাম্বুরাবিদের বিখ্যাত ষষ্ঠ রাজা হাম্মুরাবি খ্রিস্টপূর্ব ১৭৯২ অব্দে ব্যাবিলনের সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং ১৭৫০ অব্দ পর্যন্ত রাজ্য শাসন করেন। হাম্মুরাবি কোডের জন্য খ্যাতিমান এ রাজা।
বর্তমানে জনসংখ্যার হিসাবে মুসলিম দেশের মধ্যে অবস্থান ১২-তে হলেও ইসলামের ইতিহাসের স্বর্ণযুগ হয়েছিল ইরাকেই। দেশটির জনসংখ্যার মাত্র ৩৬.৬ শতাংশ মুসলিম। এছাড়া প্রায় ৬৫ শতাংশই শিয়া। ইরাক নানা ভাস্কর্যে সমৃদ্ধ বেশ আগে থেকেই। সাদ্দাম হোসেনের বিশাল আকারের ভাস্কর্যটি মার্কিন আগ্রাসনের পর ভেঙে ফেলা হয়। তাই বলে ভাস্কর্যহীন হয়নি ইরাক। প্রচুর ঐতিহাসিক ও দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্যের মালিক দেশটি। বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে ডানার ভাস্কর্যটি নজর কাড়ে যে কারও। বাগদাদের পাশে আল-মনসুর শহরে আছে মনসুরের (বাগদাদের প্রতিষ্ঠাতা) একটি বিশাল ভাস্কর্য। রয়েছে অনেক সাধারণ সৈনিকের ভাস্কর্যও। রাজধানী বাগদাদে বেশকিছু বিখ্যাত মূর্তির মধ্যে আছে ইন্টারন্যাশনাল জোনে হাম্মুরাবির মূর্তি। অ্যাম্বুরাবিদের বিখ্যাত ষষ্ঠ রাজা হাম্মুরাবি খ্রিস্টপূর্ব ১৭৯২ অব্দে ব্যাবিলনের সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং ১৭৫০ অব্দ পর্যন্ত রাজ্য শাসন করেন। হাম্মুরাবি কোডের জন্য খ্যাতিমান এ রাজা।

ছবি: সংগৃহীত
আরব্য উপন্যাসের রহস্যে এখনো রহস্যময় বাগদাদ শহরের আবু নুয়াস স্ট্রিটে শাহেরজাদি পার্কে রয়েছে আরব্য উপন্যাসের প্রধান চরিত্র শাহেরজাদি এবং রাজা শাহরিয়ারের মূর্তি। বিখ্যাত আলিবাবার বুদ্ধিমতী বাঁদী মর্জিনার বুদ্ধিতে কুপোকাৎ হয়েছিল ৪০ চোর। সেই মর্জিনার মূর্তির দেখা মিলবে বাগদাদে আলিবাবা স্কয়ারে আলিবাবা ফাউন্টেনে। এক কথায়, ইরাক এখনো ভাস্কর্য সৌন্দর্যে ভাস্বর।