তুরস্কের মসনদ থেকে যে কারণে এরদেয়ানকে সরাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
আন্তর্জাতিক
তুরস্কের মসনদ থেকে যে কারণে এরদেয়ানকে সরাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
তুরস্কে গত রবিবার অনুষ্ঠিত হয় শত বছরের সবচেয়ে গুরুত্ব নির্বাচন। এতে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী ছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান, কামাল কিলিচদারোগলু ও সিনান ওগান। তুরস্কের এই নির্বাচন শুধু তুর্কি জনগণের জন্য নয়, বরং বিশ্বের প্রধান পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
এর আগেই অভিযোগ উঠেছে, তুরস্কে কিলিচদারোগলু নেতৃত্বাধীন রিরোধী শিবিরকে সমর্থন দিচ্ছে আমেরিকা। সুতরাং তুরস্কের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের জয় বা পরাজয় যুক্তরাষ্ট্র ও এর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মাথাব্যথারও কারণ। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার সময় বিশ্বের যে কয়েকজন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান নিজ দেশের রাজনীতিতে ‘একনায়ক’ হিসেবে চিত্রিত করতে পেরেছেন, এরদোয়ান তাদের একজন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতিতে বড় এক ধাঁধাঁর নাম এরদোয়ান। 
কেননা, দু্ই দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ান একাধারে ইউরোপের সবচেয়ে বড় মিত্র ও শত্রু, যুক্তরাষ্ট্রের পর ন্যাটোর সামরিক শক্তির সবচেয়ে বড় স্তম্ভ তুরস্ক তাদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের নেতৃত্বে বলকান, ভূমধ্যসাগর, উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে এক অনন্য নীতি নিয়ে এগিয়েছে, যা বাইডেন প্রশাসনের নীতিকে বারবারই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। অন্যদিকে, এরদোয়ান যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর অন্যতম নেতা হলেও তিনি এই জোটের মূল শত্রু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সখ্য বজায় রাখছেন। 
আবার যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পররাষ্ট্র নীতিতে চিহ্নিত সবচেয়ে বড় ‘সংকট’ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গেও রয়েছে এরদোয়ানোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। শুধু তা-ই নয়, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মিত্র ইসরায়েলের সঙ্গে চাপান-উতোর সম্পর্ক রাখার পাশাপাশি ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে চিহ্নিত ইরানের সঙ্গেও এরদোয়ানের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।
সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক নীতি বদলানোর বিষয়েও চাপ দিয়ে যাচ্ছেন এরদোয়ান। সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র হিসেবে পরিচিত কুর্দিদের উপর সামরিক অভিযান চালাচ্ছেন, আবার প্রতিবেশী আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সংকটেও মধ্যস্ততা করছেন, যেখানে মস্কোর প্রভাবও রয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করলে প্রতীয়মান হয়, এরদোয়ান যেন যুক্তরাষ্ট্রের বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 
তুরস্কের নির্বাচন নিয়ে রবিবার সাংবাদিকরা ডেলাওয়ারে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আমি আশা করি, যিনিই জয়ী হোন, জয়ী হন। বিশ্বের ওই অংশে যথেষ্ট সমস্যা রয়ে গেছে।” এরদোয়ানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দুই দশকের শাসনামলে তিনি তুরস্কের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন বিচারবিভাগ ও গণমাধ্যম এবং গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করেছেন।
আন্তর্জাতিকবিশেষ প্রতিবেদনযুক্তরাষ্ট্রতুরস্ক
আরো পড়ুন