আধুনিক কুবা মসজিদ ইসলামিক পরিচয় বজায় রেখে আধুনিক সব সুবিধা নিয়ে সজ্জিত এক অনন্য স্থাপত্য কীর্তির নজির হয়ে আছে। দেয়ালজুড়ে সাদা আর ছাই রংয়ের আধিক্য থাকা মসজিদটির বর্তমান আয়তন ১৩ হাজার ৫০০ স্কয়ার মিটার। মসজিদে সাতটি প্রধান প্রবেশদ্বার এবং ১২ টি ছোট প্রবেশপথ রয়েছে। মসজিদটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। মসজিদের উত্তর পাশটি মহিলাদের নামাজ আদায়ের জন্য সংরক্ষিত। কুবা মসজিদেএখন চারটি মিনার এবং ৫৬ টি গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের সাথে ইমাম ও মুয়াজ্জিনের থাকার জায়গা, একটি গ্রন্থাগার, ১১২ বর্গমিটার অংশজুড়ে রক্ষীদের জন্য থাকার জায়গা এবং ৪৫০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে ১২ টি দোকান রয়েছে।
মূল মসজিদ ভবনের মাঝে একটি খালি জায়গা আছে, সেখানেও নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। কার্পেটে মোড়ানো মেঝেতে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন, রয়েছে জমজম পানির ব্যবস্থাও। মসজিদের চারদিকে সুবজ পাম গাছের বেষ্টনী মসজিদকে আরো সৌন্দর্যমন্ডিত করে তুলেছে। কুবা মসজিদ টি ইসলামী ইতিহাসের এক ঐতিহ্যবাহী স্হাপনা। এর সাদা পাথরের তৈরি ভবনটি বহুদূর থেকে পরিষ্কারভাবে দেখা যায়।
‘যে মসজিদ প্রথম দিন থেকে তাকওয়ার ওপর প্রতিষ্ঠিত সেখানে অবস্থান করা আপনার জন্য অধিক সংগত। সেখানে এমন কিছু লোক রয়েছে যারা পবিত্রতা পছন্দ করে। আর আল্লাহ পবিত্র ব্যক্তিদের ভালোবাসেন।’
মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ কুরআনের সূরা তওবা'র ১০৮ নং আয়াত এটি৷ আয়াতে প্রশংসিত সেই মসজিদ কোনটি, তা নির্ণয়ে দুটি মতের কথা জানা যায়, কোন কোন মুফাসসির (যাঁরা কুরআনের ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন) আয়াতের বর্ণনাধারা থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, তা হলো মসজিদে কুবা। অন্য মতটি গিয়েছে মসজিদের নববীর পক্ষে। সহীহ হাদিস বুখারী শরীফের এক বর্ণনায় এসেছে, "নবী করীম (সা.) প্রতি শনিবার কুবা মসজিদে আসতেন, কখনও পায়ে হেঁটে, কখন আরোহণ করে।" (২য় খন্ড, ১১১৯)।
আরেক সহীহ হাদিস সুনান ইবনে মাজাহ্ এর এক বর্ণনায় এসেছে, "কুবা মসজিদে এক ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) পড়া একটি ওমরাহ করার সমতুল্য।" (১ম খন্ড, ১৪১১)। আরবী ওমরাহ শব্দের মানে হচ্ছে বিশেষ পদ্ধতিতে মক্কায় অবস্হিত পবিত্র কা'বা শরীফ জিয়ারত করা। অবশ্য এটি হজ্জের মতো ফরজ নয়, বছর যে কোনো সময় এটি পালন করা যায়। কুবা মসজিদে বছর ব্যাপী দর্শনার্থীদের ভীড় লেগে থাকে, রমজান মাসে এই ভীড় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এই মসজিদে নামাজ আদায়ের ফজিলতের উপর ভিত্তি করেই এমন ভীড় হয় সবসময়।