রমজান
আগামী শনিবার (২২ এপ্রিল) ঈদুল ফিতর উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছে ৭টি দেশ। এই দেশগুলো হলো— অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রুনেই, থাইল্যান্ড এবং জাপান।
ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে সারাদেশে পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবেকদর পালিত হচ্ছে। ২৬ রমজান অর্থাৎ মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) রাতটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এ রাতে মানুষের ভাগ্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। ফলে এ রাত পূণ্যময় ও মহিমান্বিত।
লাইলাতুল কদর মহান আল্লাহর এক অফুরন্ত দান। নৈকট্য অর্জনের এক পবিত্র রজনী। পাপ মোচন এবং কল্যাণ প্রাপ্তির এক অনন্য মাধ্যম। মুমিন বান্দার সঙ্গে ফেরেশতাদের সাক্ষাত লাভের এক পবিত্র মুহূর্ত। নেকী অর্জনের এক পরম সুযোগ। এক রাতেই অর্জিত হয় হাজার মাসের ইবাদতের সওয়াব। এ রাতকে ঘিরেই সৃষ্টি হয় আসমানবাসীদের মাঝে আনন্দের আবহ।
আজ মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) দিবাগত রাতে পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবেকদর। হাদিস অনুযায়ী, ২০ রমজানের পর যেকোনো বিজোড় রাতে কদর হতে পারে। তবে ২৬ রমজান দিবাগত রাতেই লাইলাতুল কদর আসে বলে আলেমদের অভিমত।
বছরের সবচেয়ে মহিমান্বিত রাত শবে কদর। এই রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত নাজিল হয় এ রাতে। হাদিসে রাসুল (সা.) এই রাত অন্বেষণ করতে বলেছেন। লাইলাতুল কদর অনির্দিষ্ট থাকলেও হাদিসের মধ্যে এর কিছু আলামত বর্ণিত হয়েছে, যা দ্বারা লাইলাতুল কদর চেনা যায়।
মুসলমানদের কাছে লাইলাতুল কদর এক বরকতময় ও মহিমান্বিত রাত। এ রাতে আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিম নাজিল করেছেন এবং এ রাতের নামে আল্লাহতায়ালা একটি সুরাই নাজিল করেছেন। এ রাতের মর্যাদা হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম।
মাহে রমজান মাসের মর্যাদার অন্যতম দিক ‘লায়তুল কদর’ বা কদরের রাত। এ রাতের মর্যাদা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি মহিমান্বিত রাতে। আর মহিমান্বিত রাত সম্পর্কে তুমি কি জানো? মহিমান্বিত রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।’ (সুরা কদর, আয়াত : ১-৩)।
মূলত কবরের আজাব হওয়া না-হওয়ার সঙ্গে রমজানের কোনো সম্পর্ক নেই; ব্যক্তির ঈমান ও নেক আমলের সঙ্গে আজাব হওয়া না-হওয়ার সম্পর্ক। কোরআন-সুন্নায় এ সম্পর্কে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। সুতরাং মানুষের উচিত এমনসব আমল করা; সেসব আমলের প্রতি যত্নবান হওয়া, যার মাধ্যমে কবরের আজাব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
রমজান মাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এ মাসে অভিশপ্ত শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়। তাহলে প্রশ্ন জাগে, রমজান মাসে শয়তান শিকলে আবদ্ধ থাকলে মানুষ রমজানে কিভাবে পাপ করে? এর বেশ কিছু জবাব হাদিসবিশারদরা দিয়েছেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজান মাসের প্রথম রাতেই শয়তান ও দুষ্ট জিনদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করে ফেলা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, এর একটি দরজাও তখন খোলা হয় না; জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়, এর একটি দরজাও বন্ধ করা হয় না। আর একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিতে থাকে ‘হে কল্যাণকামী, অগ্রসর হও! হে পাপাসক্ত, বিরত হও। আর মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আছে জাহান্নাম থেকে বহু লোককে মুক্তিদান। প্রত্যেক রাতেই এরূপ হতে থাকে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৬৮২)
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, সরকার প্রতি মাসে ৭ থেকে ৮ শ কোটি টাকা ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য অস্বচ্ছলদের মাঝে বিক্রি করছে। এতে করে রমজানে মানুষের মাঝে কোনো হাহাকার নেই। আজ রবিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে রংপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে বরাদ্দকৃত করোনাকালীন প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রাসূল (সা.) এর আমলে রমজান মাসে সাহাবীগণ এ মাসে ইবাদতের প্রতিযোগিতা করতেন। আর এ মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো ইতেকাফ পালন করা। 'রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশদিন ইতেকাফ করতেন।' (বুখারি, মুসলিম)
চলছে সিয়াম সাধনার মাস। এ মাস অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ। রমজানে মুমিনরা পুরো মাস রোজা রাখেন। সব ধরনের গুনাহ ও অপরাধ থেকে দূরে থাকেন। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) পবিত্র রমজান মাসের ১২ তারিখ।
রমজানে খাওয়া এবং ঘুমে বদলে যাওয়া অভ্যাস নিয়মিত রুটিনে ব্যাহত হয়। তবে এ বিষয়ে পরিকল্পনা থাকলে স্বাস্থ্যসম্মত রমজান উপভোগ করা যায়। এক্ষেত্রে মাসব্যাপী রোজা রেখে স্বাস্থ্যরক্ষার পাশাপাশি ফিটনেস অক্ষুণ্ণ রাখতে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
আমরা কম বেশি সবাই ই রমজান মাসের গুরুত্ব এবং এর ইতিহাস সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানি। প্রতিবছর আমরা প্রতিটি মুসলমান এই মাসের অপেক্ষায় থাকি। মহামারির কারণে এই দুই বছরের রমজান মাস অনেক ভিন্ন হলেও এই মাস ই আমাদের অধিক প্রিয়। রাতে মসজিদে তারাবি পড়ার ভিড়, প্রতিদিন ইফতার টেবিলে নানান রকম খাবারের আয়োজন করা যেন এক ঐতিহ্য। কিন্তু আসলে কি এমন ই ছিল এই রমজান মাস পালন? কেমন ছিল আমাদের প্রিয়নবি হযরত মোহাম্মাদ (সা:) এর রমজান মাস?